স্টাফ রিপোর্ট :: সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সরকারি অফিসের চেয়ারে বসে এক তরুণী টিকটিক ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ ছেড়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় দেখা দিয়েছে। উক্ত ঘটনা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসলে নড়েচড়ে বসছেন প্রশাসন। ইতোমধ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং চেয়ারম্যান কার্যালয়ের সিএ ফিরোজ আলীসহ ২ অফিস সহায়ককে শোকজ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রধান করে ৩সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ প্রতিবেদককে জানান।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে এই তরুণী @shimaqueen22 নামের টিকটক আইডিতে ভিডিওটি ছাড়েন। মুহুর্তের মধ্যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। উপজেলা জুড়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায় তরুণী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে এক সময়ের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সাজ্জাদ নূরের একটি গানের সাথে লিপ সিঙ্ক করছেন।
ভিডিওতে আরো দেখা যায়, পেছনের নেমপ্লেটে লাগানো বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করা পরিষদের চেয়ারম্যানদের নাম ও মেয়াদকাল ফলক। পাশেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লগোর নীচে লেখা চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ, গোলাপগঞ্জ সিলেট। তবে গোলাপগঞ্জ শব্দটি আংশিক রয়েছে। টেবিলের বামপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা দিয়ে মহান বিজয় দিবসের বানানো একটি ক্রেস্ট।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি প্রায় সাড়ে ৫হাজারের অধিক ভিউ হয়েছে। ৫৪২ রিঅ্যাকশন ও ২৮টি কমেন্ট রয়েছে। ভিডিওটির কমেন্টে একজন ইউজার মন্তব্য করেছেন, “অভিনন্দন উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেবা”। তবে এই তরুণীর পরিচয় এখনো জানা যায়নি এবং শংশ্লিষ্টরা তরুণীর পরিচয় জানতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলটন চন্দ্র পালের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এর সত্যতা নিশ্চিত করে এ প্রতিবেদককে জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়টি তালা দেয়া থাকে। সেখানে ওই তরুণী কিভাবে ঢুকেছে এ নিয়ে প্রকৌশলীকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অফিসের সিএসহ ৩জনকে শোকজ করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম আমেরিকায় চলে যান। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার সারাদেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করেন। ফলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শুণ্য রয়েছে।
এদিকে উপজেলার অভিজ্ঞ মহল থেকে জানা যায়, চেয়ারম্যান অফিস তালা দেয়া থাকে। সেই অফিসের তালা খুলে কারা তরুণীকে টিকটিক ভিডিওর সুযোগ করে দিলেন? তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।
Tags
গোলাপগঞ্জ